
এক কথাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে সচেষ্ট থাকলে হিমশিমে থাকেন। তেমনই ঘটনায় পাইকগাছায় জমি দখলে বাঁধা দিলে প্রতিপক্ষের হামলা-মারপিটে গৃহবধূ, শিক্ষার্থী সহ একই সম্প্রদায়ের ১৩ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। রবিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে লস্কর ইউনিয়নের ঠাকরণবাড়ীর চকে এ ঘটনাটি ঘটেছে। আহত অনেকের মাথা ফেটেছে, অনেকের হাত-পা, মূখ, ঠোট, হাটু সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা গুরুতর।
আহতরা হলেন, ঠাকুরনবাড়ীর কুঞ্জু সরদার(৬০) জয়ন্তী সরদার (৫২) মঙ্গল সানা (৫০) যমুনা সানা(৩৫), প্রভাষ সানা (৪২), রনজিৎ সরদার (৫৫) কলেজ ছাত্রী চুমকি সানা(১৮) লতা সরদার (১৮), রামপ্রসাদ সরদার (৪০), শ্যামলী (৩৫), পারুল (৫৫), বিশ্বনাথ সানা (৪৫), ব্রজেন সরদার (৩৫) সহ আরো অনেকে। ঘটনার পর পরই আহতদের থানায় আনা হয়।
এ সময় ডিউটিরত পুলিশ কর্মকর্তা চিকিৎসার জন্য দ্রুত আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কুঞ্জু সরদার জানান, বসতবাড়ী সংলগ্ন ৩ একর জমি বংশানুক্রমে আমরা কয়েকটি পরিবার ভোগ দখল করে আসছি। তিনি আরোও জানান, সম্প্রতি লক্ষ্মীখোলার মজিদ কাগজী, অজিয়ার কাগজীরা ক্রয়সূত্রে এ সম্পত্তি দাবী করে আসছেন।
কুঞ্জু সরদার, মঙ্গল ও যমুনা সানা দম্পতি অভিযোগ করেন রবিবার সকালে আজিয়ার ও মজিদ কাগজীর ইন্ধনে তাদের ছেলে সুমন কাগজী, সোহাগ কাগজী সহ ভুট্টা কাগজী, আলমতলার মোস্ত, জামাল সহ ৩৫/৪০ ভাড়াটে লোকজন নিয়ে এ জমিতে পৌঁছে বাসা বেঁধে দখল চেষ্টা করেন। এ সময় বাঁধা দিলে লাঠিসোটা, হাঁতুড়িপেটা করে কুঞ্জু সরদার দম্পত্তি সহ ১২ জন নারী-পুরুষ আহত হয়। এদিকে মাথায় রক্তক্ষরণের কারণে গুরুতর আহত অবস্থায় বিকালে কুঞ্জু সরদার ও জয়ন্তী রানীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের পাইকগাছা উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার সঠিক তদন্ত পুর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
ইউপি চেয়ারম্যান কে এম আরিফুজ্জামান তুহিন এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, জোর পূর্বক জমি দখলের সময় তাদের উপর হামলা ও মারপিট করা ঠিক হয়নি। এটা স্থানীয়ভাবে কিংবা উচ্চ পর্যায়ে বসাবসি করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। তিনি এ ঘটনার সঠিক তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় আমন মৌসুমের বীজতলার ধানের পাতা নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে প্রতিপক্ষ কাগজীদের ক্ষয়-ক্ষতি সমন্ধে এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যাইনি। অপরদিকে, শনিবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার গড়ইখালী ইউনিয়নের কুমখালীতে ধান্য রোপনে বাঁধা দিলে দু'পক্ষের সংঘর্ষে শিক্ষক দম্পতি ও মহিলা সহ উভয় পক্ষের ৬ জন আহত হয়।
থানার ওসি মোঃ জিয়াউর রহমান জিয়া জানিয়েছেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৭টা) আহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছিল
0 coment rios: