Sunday, 20 February 2022

পাইকগাছায় গর্ভজাত শিশুর মৃত্যুতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি আজ প্রতিবেদন দাখিল করবে


পিসিমন্ডল, পাইকগাছা।।  পাইকগাছা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতি  ওয়ার্ডে ডাক্তার-নার্সদের অবহেলায় গর্ভজাত শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গতকাল শনিবার তদন্ত সম্পন্ন করেছে। আজ রবিবার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারে পরিকল্পনা কর্মকর্তার নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে জানা গেছে। 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ নীতিশ চন্দ্র গোলদার জানান, ডেলিভারীর আগেই অবহেলায় গর্ভজাত অনাগত শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে মর্মে লিখিত অভিযোগ পেয়ে হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থ পেডিক্সক) ডাঃ মোঃ ইমরানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করার কথা।     

উল্লেখ্য, কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের কাঠমারচর গ্রামের ভরত চন্দ্র মন্ডল ১৩ ফেব্রুয়ারী বিকালে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেলিভারীর জন্য তার স্ত্রী কৃষ্ণা রানী মন্ডলকে  ভর্তি করেন। পরের দিন সকালে নার্সরা আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে বললে মাতৃগর্ভে বাচ্চা মৃত রির্পোটে আসে। মৃত রির্পোট আসায় ভরত চন্দ্র মন্ডল দায়িত্বরত নার্সদের অবহেলার কারণে মাতৃগর্ভে শিশুর মৃত্যু  হয়েছে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ পত্র জমা দেন । এব্যাপারে ভরত মন্ডল বলেন, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি গর্ভবর্তী  স্ত্রী কৃষ্ণা মন্ডল কে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ভর্তি করি।

ওই সময় প্রসূতি ওয়ার্ড ডিউটিরত নার্সরা বাচ্চা ও মা উভয়েই ভালো আছে বলে জানায়। কৃষ্ণা মন্ডলের প্রসব বেদনা মাঝেমধ্যে বাড়ে-কমে এ অবস্থার এক পর্যায়ে রাত ১১টার পর বেশি ব্যাথা উঠলে ভরত চন্দ্র মন্ডল নার্সদের ডাকতে যান। ওই সময়ে দায়িত্বরত সিনিয়র নার্স হামিদা খাতুন ও ইয়াসমিন আহমেদ ইমা তাদের রুমে ঘুমিয়ে ছিল। আমি ও সাথে থাকা অন্য রোগীর লোকজনও ডাকাডাকি করলেও নার্সরা উঠেনি। ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে নার্সদের দেখা মেলে। তখনও নার্সদের বক্তব্য বাচ্চা ভালো আছে। কিন্তু নার্সরা কৃষ্ণা মন্ডলের ব্যাথা ওঠার বিষয়টি ডিউটিরত মেডিকেল অফিসারকে একবারও জানায়নি। সকালে কৃষ্ণা মন্ডলের গর্ভের বাচ্চার নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেলে নার্সদের জানালে তখন আলট্রাসনো করাতে বলেন। সকাল ৮টার দিকে হাসপাতালের বাইরে থেকে আলট্রাসনো করানো হলে অনাগত সন্তানের মৃত্যুর রিপোর্ট পাওয়া যায়। ভরত মন্ডল আক্ষেপ বলে বলেন, হাসপাতালে দায়িত্বরত ডাক্তার ও নার্সরা যদি অবহেলা না করত তাহলে এমন ঘটনা ঘটত না। আমার ও আমার স্ত্রী'র সাথে যেটা ঘটলো সেটা যাতে অন্য কাহারোর সাথে না ঘটে তাহার জন্য এ অভিযোগ। এব্যাপারে সিনিয়র নার্স হামিদা খাতুনেরর কাছে জানতে চাইলে তিনি অবহেলা করার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, তারা যে অভিযোগ করছে মিথ্যা। রাতে উনাদের পাশের বেডের রোগীকে চেকআপ করি। সে সময়ও ঐ রোগীকে ভাল আছে কিনা  জিজ্ঞাসা করতে উনি বলে - আছে। তাছাড়া কেবিনে একটি স্টোকের রোগীর অবস্থা খারাপ ছিল বলে সেখানে বেশীর ভাগ সময় ছিলাম।



শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: