Wednesday, 1 December 2021

পাইকগাছায় বিরোধপূর্ণ লিজ ঘেরে আদালত কর্তৃক উকিল কমিশন নিয়োগে সরেজমিন তদন্ত

পাইকগাছায় বিরোধপূর্ণ লিজ ঘেরে আদালত কর্তৃক উকিল কমিশন নিয়োগে সরেজমিন তদন্ত
পাইকগাছায় বিরোধপূর্ণ লিজ ঘেরে আদালত কর্তৃক উকিল কমিশন নিয়োগে সরেজমিন তদন্ত




খুলনার পাইকগাছায় বোয়ালিয়াস্থ বিরোধপূর্ণ মৎস ঘেরের জমি দখল ও বালু ভরাটসহ একাধিক অভিযোগের ঘটনায় আদালত কর্তৃক দখল ভিত্তিক স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার আদেশ অমান্য হয়েছে কিনা সে বিষয়ে জানতে সরাসরি উকিল কমিশন নিয়োগ করেছেন বিজ্ঞ আদালত। মঙ্গলবার বিকালে আদালতের নির্দেশে সরেজমিন উকিল কমিশন এ বিষয়ে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেছেন। ভুক্তভোগী জমি মালিকের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত কর্তৃক অদৃষ্ট হয়ে একজন নিরপেক্ষ উকিল ও উভয় পক্ষের আইনজীবী সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। জানাগেছে, পাইকগাছা বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে দেঃ ২৫৮ নং মামলা চলাকালীন দখল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিরোধপূর্ণ মৎস্য ঘেরের জমিতে সমিরন সাধু কর্তৃক বালি ভরাট, নতুন ঘর তৈরীসহ বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী জমি মালিক মাকসুদুর রহমান মুকুল। অভিযোগের পর পাইকগাছা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের এক আদেশে উকিল কমিশন নিয়োগ করে সরেজমিন তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ প্রদানের পর মঙ্গলবার উকিল কমিশন সরেজমিনে এ তদন্ত করেন।
সুত্র জানায়, উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের হিতামপুর মৌজায় এসএ ৩৭৮ খতিয়ানের ১৭৭ দাগ সহ বিভিন্ন দাগে ক্রয় ও ডিড মুলে মোট ১২ বিঘা জমিতে প্রায় ৬ বছর ধরে মৎস লীজ ঘের করে আসছে হিতামপুর গ্রামের আব্দুল হামিদ মোড়লের ছেলে মাকসুদুর রহমান ও তৈয়েবুর নামে দুই ভাই।
গত আগষ্ট মাসে হঠাৎ করে মেলেকপুরাইকাটী গ্রামের মৃত অধীর সাধুর ছেলে সমিরন সাধু মাকসুদুর রহমান গংদের মৎস লিজ ঘেরের মধ্য হতে মুকুল মোড়ল গং এর নিকট থেকে ৪ বিঘা জমি ক্রয় করেছে বলে তার ক্রয়কৃত জমি ছেড়ে দিতে বলেন।
পরবর্তীতে মাকসুদুর রহমান ২২ আগষ্ট পাইকগাছা সিনিয়র সহকারী জর্জ আদালতে দেওয়ানী মামলা করেন যার নং ২৫৮/২১ ইং।


পাইকগাছায় বিরোধপূর্ণ লিজ ঘেরে আদালত কর্তৃক উকিল কমিশন নিয়োগে সরেজমিন তদন্ত


জমি ছেড়ে না দেয়ায় মেলেক পুরাইকাটী গ্রামের মৃত অধীর সাধুর ছেলে সমিরন সাধু লোকজন নিয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর মাকসুদুর রহমান গং এর ঘেরের মধ্য হতে প্রায় ৪বিঘা জমি বাঁধ দেয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ এসে উভয় পক্ষকে স্থান থেকে সরিয়ে দেয়।
গত ৪ নভেম্বর সিনিয়র সহকারী জর্জ এক আদেশে বলেন, নালিশী দরখাস্থ চুড়ান্তভাবে নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নালিশী জমির দখল ভিত্তিক স্থিতি অবস্থা বজায় রাখতে উভয় পক্ষকে নির্দেশ দেয়া হলো। আদালতের উপরোক্ত আদেশ অমান্য করে দখল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিরোধপূর্ণ মৎস ঘেরের জমিতে নতুন করে বাঁধ মেরামত, বাসা নির্মাণ, বলু ভরাট করার অভিযোগ এনে সমিরণ সাধুর বিরুদ্ধে গত ২২ নভেম্বর আদালতে পিটিশন করেন ভুক্তভোগী মাকসুদুর রহমান মুকুল।
অভিযোগের বিষয়ে গত ২৪ নভেম্বর শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত পাইকগাছা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র আইনজীবী এ্যাড জি এ সবুরকে প্রধান করে উকিল কমিশন নিয়োগ করেন।
এরপর মঙ্গলবার বেলা ৩ টার দিকে আদালত কর্তৃক নিয়োগকৃত উকিল কমিশন সরেজমিনে তদন্তে আসেন। যেসব বিষয়ের উপর তদন্ত সম্পন্ন করেন সেগুলো হলো
১. নালিশী জমি পূর্বে কি অবস্থায় ছিল। বর্তমানে উক্ত জমির মধ্যো গত ১৫ নভেম্বর ২১ ইং এর পর বাঁধ দেয়া হয়েছে কিনা? হইলে ঐ বাঁধ কতফুট লম্বা ও উচ্ছতা।
২. নালিশী লীজ ঘেরের মধ্যে কোন জমিতে বর্তমানে বালু ভরাট করা হয়েছে কিনা। হইলে কত তারিখে কতোটুকু জমিতে বালু ভরাট হইয়াছে এবং বালু কিভাবে ভরাট করা হয়েছে তা জানা আবশ্যক।
৩. নালিশী লীজ ঘেরে নতুন করে বা সদ্য কোন বাসাবাড়ি তৈরি করা হয়েছে কিনা। হইলে তার দৈর্ঘ্য প্রস্তু কত এবং কতদিনপূর্বে নির্মান করা হয়েছে তা জানা আবশ্যক।
৪. নালিশী লিজ ঘেরটি পূর্বে এক খন্ড ছিল কিনা, বর্তমানে কত খন্ড বিভক্ত করা হইয়াছে এবং কতদিন পূর্ব হইতে উক্ত লিজ ঘেরটি খন্ড করা হয় তাহা জানা আবশ্যক।
উপরোক্ত বিষয়বলীর আলোকে উকিল কমিশন তদন্ত সম্পন্ন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, এ্যাড আবু সাঈদ, এ্যাড ইদ্রিসুর রহমান, এ্যাড পঙ্কজ কুমার ধর, এ্যাড আব্দুস সাত্তার, এ্যাড এফ এম এ রাজ্জাক, এ্যাড কালিপদ মন্ডল, এ্যাড সুকল্যান মন্ডল, অনন্য আইনজীবীসহ স্থায়ীয় সাংবাদিক জি এ গফুর, স্নেহেন্দু বিকাশ, জিএম মিজানুর রহমান, মিজানুর রহমান মন্টু, বাবুল আক্তার, এ কে আজাদ, শেখ সেকেন্দার আলী, মোঃ আসাদুল ইসলাম, ফসিয়ার রহমান, স্থানীয় মেম্বর হারুন অর রশীদ হিরু। মামলার বাদী মাকসুদুর রহমান, বিবাদী সমিরণ সাধু সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: