Monday, 2 January 2023

দূর্লভ ও বিপন্নপ্রায় খির খেজুর বৃক্ষ


পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছা::খির খেজুর বৃক্ষ একটি দুর্লভ এবং বিপন্নপ্রায় গাছ। বীজ থেকে এর চারা হয়। এর অন্যান্য নাম ফিরনি, খিরি, খির খেজুর, খিলুনি। এই গাছটি বেড়ে উঠতে অনেক সময় লাগে। এটি বিশাল আকৃতির চিরহরিত বৃক্ষ । এর জন্ম হয় গ্রীষ্মপ্রধান নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে। এর দেখা মেলে মূলত চীনের হাইনান এবং দক্ষিণ গুয়াংসি প্রদেশ; দক্ষিণ এশিয়ার শ্রীলংকা, ভারত, বাংলাদেশ; দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ক্যামবডিয়া, মিয়ানমার ও ভিয়েতনামে।

বাংলাদেশে নাটোর,খুলনা,যশোহর জেলায়, ঢাকা শহরের বিভিন্ন ইন্সটিটিউট প্রাঙ্গণে এলাকায় খিরি গাছের সন্ধান পাওয়া যায়। দেশের নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানে এ গাছ দেখা যায়। একই কারণে এ গাছকে দুর্লভ এবং বিপন্ন মনে করা হয়। খিরনি বা খিরি বা খির খেজুর  হচ্ছে সাপোটাসি পরিবারের মানিলকারা গণের সপুষ্পক উদ্ভিদের একটি বৃক্ষ।  খিরি বৃক্ষ সফেদা প্রজাতির।বীজ থেকে চারা তৈরি হয়। খির খেজুর চারার সাথে সফেদার জোড় কলম তৈরি করা হয।এজন্য সফেদার মাতৃ কলম তৈরিতে খির খেজুর চারার ব্যাপক চাহিদা নার্সারীতে। এটি ফলজ উদ্ভিদ হিসাবে বগানে,পুকুর পাড়ে,রাস্তার ধারে লাগানো হয়। খির খেজুর শুষ্ক অঞ্চলের উদ্ভিদ তবে পলি মাটিতে ভালো জন্মে।

খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর সহ বিভিন্ন গ্রামে খির খেজুর বৃক্ষ রয়েছে।  গদাইপুর নার্সীর জন্য খ্যাত।খির খেজুরের চারা ছাড়া সফেদার জোড় কলম তৈরি করা যায় না্ সে জন্য নার্সারীতে খির খেজুরের চারার চাহিদা রয়েছে। উপজেলার গদাইপুর ফুটবল খেলার মাঠের উত্তর পাশে টেকনিক্যাল স্কুলের সামনে মেইন সড়কের ধারে বিশাল একটি খির খেজুর গাছ রয়েছে। গাছে প্রচুর ফল ধরেছে। ছোট বড় সবাই সুমিস্ট পাকা ফল খেতে গাছের তলায় ভীড় করছে। গাছের মালিক মোসলেম গাজী জানান, গাছটির বয়স প্রায় ৩০ বছর। প্রতি বছর ফল ধরে তবে এ বছর প্রচুর ফল ধরেছে। এর ফল খুব মিস্টি, যে খেয়েছে সে আবারও এ ফলের স্বাধ নিতে ফল খাওয়ার জন্য আসবে।প্রতি দিন ছোট ছেলেরা গাছে উঠে পাকা ফল পাড়ছে। এ গাছের ফলের বিচির  চাহিদা রয়েছে নার্সারীতে।

বিশাল আকৃতির চিরসবুজ বৃক্ষ এটি। এ গাছ সাধারণত ১২ থেকে ৩৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে, আর চওড়ায় ১ থেকে ৪ মিটার। এর বাকল ষৎ ধূসর এবং রুক্ষ। প্রসারিত মুকুট, বাকলে দুধের মতো ল্যাটেক্স আছে। পাতা সরল, পুরু, ডালের আগায় দলবদ্ধভাবে জন্মে। ফুল হালকা হলুদ বর্ণের। ফল রসাল, বকুল আকৃতির, পাকলে হলুদ হয়। ফল থেতে খুব মিস্টি। কাঠ মজবুত, আসবাব তৈরিতে কাজে লাগে। শ্রাবণ মাস ফুল ও অগ্রহায়ণ থেকে ফলের মৌসুম। ফল দেখতে বকুল ফলের মতন আর বিচি সফেদার ফলের মতন। এর মিস্টি ফল ছোট বড় সবার কাছে খুব প্রিয়। এর কাঠ বেশ মজবুত হওয়ায় আসবাব তৈরিতে কাজে লাগে।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: