Sunday, 28 November 2021

পাইকগাছায় কপোতাক্ষ নদের ভাঙ্গন আবারো ব্যাপক আকার ধারণ

পাইকগাছায় কপোতাক্ষ নদের ভাঙ্গন আবারো ব্যাপক আকার ধারণ



পাইকগাছার রাড়ুলী ইউনিয়নের কপোতাক্ষ নদের ভাঙ্গন আবারো ব্যাপক আকার ধারণ করছে। ইতোমধ্যে নদী গর্ভে চলে যেতে বসেছে প্রায় ২০ টি ঘর। ঘরবাড়ি হারিয়ে অন্যত্রে চলে গেছে আরো ৭০পরিবার। ভাঙ্গন এলাকায় চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি তিন ভাগের ২ ভাগ নদী গর্ভে চলে গেছে। জোয়ারের পানি ঠেকানোর জন্য নেই কোন বাঁধ। সে কারণে অমাবশ্যা ও পূর্নিমা জোয়ারে পানি বাড়লে এলাকা প্লাবিত হয়ে ক্ষতি হচ্ছে গাছপালা ফসলী জমি ও কাঁচা ঘরবাড়ি।

নদীর পাড়ের জেলে পরিবারে ভূধর বিশ্বাস জানান, আমার বাবা ও দাদারা প্রায় ১শ বছর ধরে এখানে বাস করে আসছে। নদীর কুলে ১শ থেকে দেড়শ বিঘা জমি ছিলো। যেখানে ১৫০ টি জেলে পরিবার বাস করতো। ভাঙ্গনের ফলে এখান থেকে ৭০ টি পরিবারের ঘর নদী গর্ভে চলে গেছে। তারা কেহ জমি কিনে অন্যত্র বাড়ি করেছে কেহবা রাস্তার পাশে ও অনেকেরই গুচ্ছগ্রামে ঠাই মিলেছে। 

একই এলাকার লিপিকা বিশ্বাস জানান, রাতে জোয়ার আসলে ভয় হয় বাচ্চাদের নিয়ে রাত জেগে বসে থাকি কখন না ঘরখানা নদী গর্ভে চলে যাই। ভাটা হলে ঘুমাতে যাই। 

রাড়ুলীর ৩ নং ওয়ার্ডের ফরিদা বেগম (৫৫) বলেন আমাদের বাড়ি ছাড়া নদী প্রায় আঁধা কিলোমিটার দুরে ছিলো। । আমরা এখানে প্রায় ৪০ পরিবাবার বাস করতাম। জেলে পল্লীর পর আমরা এখন নদীর কিনারায় রয়েছি। যে কোন সময় ঘর খানি ভাঙ্গনে নদীতে চলে যাবে। 

একই এলাকার বারিক মোড়ল জানান আমি তিনবার ঘর পরিবর্তন করেছি। তার পরেও রান্না ও কাঠের ঘর নদীতে চলে গেছে। বাকি রয়েছে থাকার ঘরখানি। যে কোন সময় নদীতে চলে যাবে। তেমন কোন টাকা পয়সা নাই অন্যত্রে জমি কিনে বাড়ি করবো।সরকার যদি নদের ওপারে জেগে উঠা চরে আমাদের ঘর বাঁধার জায়গা দিতেন তা হলে আমরা ছেলেমেয়ে নিয়ে বসবাস করতে পারতাম।
 রাড়ুলী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য মোঃ ইলিয়াস হোসেন বলেন, অমাবশ্যা ও পূর্ণমার পানি ঠেকানোর জন্য নিজস্ব অর্থায়নে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে বাঁধ নির্মান করি। অতিরিক্ত পানি বাড়লে ঘরবাড়ি ফসলাদি বাঁচানো সম্ভব হবে না। 
রাড়ুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবুল কালাম আজাদ বলেন, কপোতাক্ষ নদ প্রায় ৪০ বছর ধরে ভাংছে । এখানে সরকার ভঙ্গন রোধে তেমন কোন বরাদ্দ দেননি। আমি গত উপজেলা আইন শৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায় উত্থাপন করেছিলাম। আবারো দু-এক দিনের মধ্য সভা হবে সেখানে উত্থাপন করবো এবং যাতে খুব তাড়া তাড়ি ভাঙ্গন রোধে বরাদ্ধ পাওয়া যায় তার জন্য আমাদের এমপি মহাদয়ের সাথে কথা বলবো। 
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকরী প্রকৌশলী রাজু আহম্মদ বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছে। শুধু রাড়ুলীর মালোপাড়া না বোয়ালিয়ার মালোপড়া ও রামনাথপুরে ভাঙ্গন এলাকা জরিপ করে কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু হবে।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: