Sunday, 16 October 2022

পাইকগাছায় ঝুঁপড়িতে মুয়াজ্জিন আবুল হাসানের মানবেতর জীবনযাপন!

পাইকগাছায় ঝুঁপড়িতে মুয়াজ্জিন আবুল হাসানের মানবেতর জীবনযাপন!

পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছা :প্রবাদ আছে " কেউ থাকে গাছতলায় আবার কেউবা থাকে পাঁচতলায় " কথাটা যেনো সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। গাছতলায় না থাকলেও মৃত্যুকালে পিতার রেখে যাওয়া ঘর করার মত সামান্য জমি আছে। জমি থাকলেও অর্থের অভাবে ঘর নির্মাণ করতে না পেরে বর্তমানে ছোট ঝুঁপড়িতে স্ত্রী, পুত্র, কন্যাকে নিয়ে মানবতার জীবনযাপন করছেন পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের আগড়ঘাটা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন আবুল হাসান মিস্ত্রী ৷ 

ঘর নির্মাণ করার জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা পেতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জনপ্রতিনিধি ,সমাজের বিত্তবানসহ সমাজের সকল শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে আর্থিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন আবুল হাসান সহ তার পরিবার ৷

তিনি আগড়ঘাটা বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন ও সিলেমানপুর গ্রামের মৃত কান্তা মিস্ত্রীর পুত্র। সিলেমানপুর গ্রামটি বাগিচায় ভরা। ঢুকতেই পাক-পাখালি কিচিরমিচির।মনোরম পরিবেশে পথেমধ্যে উনার কথা জিজ্ঞাসা করতেই খুব সহজেই পৌঁছালাম মুয়াজ্জিন আবুল হাসানের বাড়িতে।  সহজ সরল সাদা মনের মানুষ। হঠাৎ বাড়িতে মেহমান দেখে ইতস্তত। বুঝতে কষ্ট হলো না। 

আমাকে কোথায় বসতে দিবেন।চোখ পড়ল তার একমাত্র বসতে ঘরটি তে। ঘরটির একপ্রান্তে মাটির দেয়াল। সামনে ভাঙচুর টিন,কাঠ দিয়ে বেঁড়া। অনর্থ পাশে ফাঁকা। চালটি জির্ণ গোলপাতা দিয়ে তৈরি হলেও কিছু কিছু স্থানে সুপারি বা নারকেল পাতায় ঢাকার আপ্রাণ চেষ্টা। মনে পড়ে গেল " আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও,রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও।বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি,একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি।একটুখানি হাওয়া দিলেই ঘর নড়বড় করে,তারি তলে আসমানীরা থাকে বছর ভরে-----। 

গ্রাম-বাংলার অয়াজপা়ড়া গায়ে এখনও অনেক আসমানীরা শত কষ্টে নিভৃতে বসবাস করছে৷ জানতে চাইলে, মুয়াজ্জিন আবুল হাসান জানান , আমার আয় সীমিত। তা দিয়ে খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে দিন কেটে যায়। পরিবারে যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরায় সেখানে ঘর নির্মাণ করার মত অর্থ যোগান দেওয়া তার পক্ষে অসম্ভব। অন্যদিকে অর্থের অভাবে দীর্ঘদিন ঘরটির কোন মেরামত না করায় রোদ বৃষ্টিতে সেই ঘরে এখন বসবাস করার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। 

মুয়াজ্জিন আবুল হাসান আরও জানান, বর্তমানে মাটির দেয়ালের তৈরি ঘরটি বৃষ্টির পানি পড়ে পড়ে নরম হয়ে যাওয়ায় হেলে পড়তে পারে যার ফলে যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে প্রাণহানি সহ বড় দূর্ঘটনা। ঘরের চালাটি নষ্ট হয়ে পড়ায় ঘরের চালা দিয়ে পানি পড়ে ঘরের মেঝে সহ ঘরে আসবাসপত্র গুলোতে বৃষ্টির পানি জমে। ঝড় বা একটু জোরে বাতাস হলে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশংকায়, আতংকে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় তার পরিবারকে। 

নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগমকে অবহিত করলে তিনি জানান, খুব শীঘ্রই উনাকে প্রয়োজনীয় সাহায্য করা হবে।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: