Wednesday, 12 April 2023

পাইকগাছার গজালিয়া চৌরাস্তা থেকে চৌমুহনী ও পাতড়াবুনিয়া সড়কের বেহাল দশা; দ্রুত সংস্কার ও উন্নয়নের দাবী


পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছা::পাইকগাছার দুই ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মিনহাজ্ব নদীর ধারের চাঁদখালী ইউনিয়নের পূর্ব গজালিয়া, চৌমুহনী এবং গড়ইখালী ইউনিয়নের পাতড়াবুনিয়া সড়কটি চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।২কিলোমিটার সড়ক সম্পূর্ণ কাঁচা রয়েছে। গজারিয়ার চৌরাস্তা থেকে চৌমুহনী পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কের প্রায় দেড় কিলোমিটার ইটের ছলিং যেবড় থেবড়।

মাঝে আধা কিলোমিটার খালধার কয়রা উপজেলার হাতিয়ারডাঙ্গা রয়েছে।পাতড়াবুনিয়া সড়কটির দুই কিলোমিটার সড়কের কাঁচা।

কিছু কিছু স্থানে ইটের ছলিং, কিছু পাঁকা ও কার্পেটিং থাকলেও প্যালাসাইটিং ও গাইডওয়াল না থাকায় সড়কের কোথাও কোথাও ভেঙ্গে সরু আইলের পরিণত হয়েছে। ফলে যানবাহন সহ সাধারণ মানুষের চলাচল অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে জনগুরুত্বপূর্ণ পাতড়াবুনিয়া সড়কটি। সড়কটি দ্রুত সংস্কার ও উন্নয়ন করার দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী। 

উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে মৎস্য চাষে ও কৃষি খাতে চাঁদখালী ইউনিয়ন এবং আর্থ সামাজিক ও কৃষি ফসলের জন্য সুন্দরবন সংলগ্ন গড়ইখালী ইউনিয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউনিয়নদ্বয় গুরুত্বপূর্ণ হলেও  অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিক থেকে এখনো অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। বিশেষ করে অনুন্নত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে উপজেলা সদরের সাথে ইউনিয়নের ভালো যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এখনো অনেক এলাকা কাঙ্খিত উন্নয়ন থেকে বিরত রয়েছে। মনে হবে মান্ধারতার আমলে রয়েছি।  ইউনিয়নের মিনহাজ্ব বাজার সংলগ্ন পিচের রাস্তার বটতলা থেকে মিনহাজ্ব নদীর ধার দিয়ে বগুড়ারচক-পাতড়াবুনিয়া ও চৌমুহনী হয়ে গজালিয়া চৌ-রাস্তা মোড়ের পাইকগাছা-কয়রার প্রধান সড়কের সাথে যুক্ত হয়ে সরাসরি উপজেলা সদরে যাতায়াতের একটি সড়ক রয়েছে। সড়কটির বটতলা থেকে এ্যাডঃ এনামুল হকের বাড়ী পর্যন্ত পাকা। এরপর বগুড়ারচক বাজার পর্যন্ত কার্পেটিং, এরপর আবার মালেক গাজীর বাড়ী পর্যন্ত পাকা। মালেক গাজীর বাড়ী হতে চৌমুহনী বাজার পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়ক সম্পূর্ণ কাঁচা। পাশাপাশি কার্পেটিং করা রাস্তার বেশিরভাগ ইট ভাঙ্গনে নদীতে চলে গেছে। 

চৌমুহনী বাজারে গ্রাম ডাক্তার মোঃ আবু রায়হান শাহীন, নরেন্দ্রনাথ রা জানান, বেহাল সড়কের জন্য এলাকার মানুষের দুর্ভোগের সীমা নাই। কোন গর্ভবতী মায়ের, জরুরি রোগীদের সদরে নিতে খুবই সমস্যায় পড়তে হয়। অন্যান্য কথা বাদ আঃ দিলাম।

কোথাও কোথাও রাস্তা সরু আইলের ন্যায় হয়ে গেছে। ফলে যানবাহন সহ সাধারণ মানুষের চলাচলের অনুপোযোগী জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি। সড়কটির সাথেই রয়েছে বগুলারচক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বগুলারচক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পাতড়াবুনিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও বঙ্গবন্ধু মহিলা দাখিল মাদ্রাসা সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সড়কটি চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ায় যাতায়াতে চরমভোগান্তিতে রয়েছে স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী সহ সাধারণ মানুষ। 

বগুলারচক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অন্তরা মন্ডল, মলিনা মন্ডল ও হাবিবা মুম তাহিনা জানান, এখন শুষ্ক মৌসুমে সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমের আগে সড়কটি সংস্কার করা না গেলে যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে অনেক সময় বই-খাতা নিয়ে নদীতে পড়ে যাওয়ার আশংকা থাকে। এ জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দ্রুত উন্নয়ন করা দরকার। 

পাতড়াবুনিয়া গ্রামের আব্দুর রশিদ তরফদার জানান, যারা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন তারা সবাই ভোটের আগে রাস্তা উন্নয়ন করার আশ^াস দেন। কিন্তু ভোটের পরে কেউ তাদের কথা রাখে না। ফলে রাস্তা নিয়ে আমাদের দুর্ভোগ কখনো শেষ হয় না। 

চাঁদখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাজাদা ইলিয়াস ও গড়ইখালী ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আব্দুস সালাম কেরু জানান, অত্র সড়কটি ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মধ্যে অন্যতম। এই সড়কটি সংস্কার ও উন্নয়ন করা গেলে ইউনিয়ন পরিষদের সাথে উপজেলা সদরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হবে। সড়কটির উন্নয়নের ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে বলে স্থানীয় এ জনপ্রতিনিধি জানান।  সড়কটির উন্নয়নের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান খান। সড়কটি যাতে চলাচলের উপযোগী হয় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সবধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম। বর্ষা মৌসুমে চলাচল বন্ধ হওয়ার আগেই সড়কটি যথাযথ মেরামত ও উন্নয়ন করা হোক এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।



শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: