Sunday, 21 May 2023

অবশেষে হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়ন পাইকগাছায় মধুমিতা পার্কের ৩৩টা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

অবশেষে হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়ন পাইকগাছায় মধুমিতা পার্কের ৩৩টা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
অবশেষে হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়ন পাইকগাছায় মধুমিতা পার্কের ৩৩টা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ


পাইকগাছা অফিস::অবশেষে সকল জটিলতা, প্রতিবন্ধকতা, শঙ্কা কাটিয়ে পাইকগাছায় হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পৌর সদরের প্রাণকেন্দ্রে মধুমিতা পার্কের অবৈধভাবে নির্মিত ৩৩টা দোকান ঘর সহ সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। স্থাপনা উচ্ছেদ হওয়াএলাকাবাসীর মাঝে খুঁটির আমেজ বিরাজ করছে। 

উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে অনেকের মাঝে শঙ্কা থাকলেও গতকাল শনিবার সারাদিন ব্যাপী জেলা সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আল আমিন এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন এবং হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেন। এসময়ে জেলা প্রশাসকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম মাহমুদুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম, ওসি তদন্ত তুষার কান্তি দাশ, সার্ভেয়ার মোঃ হাসান, মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম, আশাশুনি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মোঃ আবুল কালাম মোড়ল সহ থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, পাইকগাছায় বহুল আলোচিত মধুমিতা পার্কটির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে বারংবার ধোঁয়শা কাটছিল না। ভূমিখেকোরা এতটাই প্রভাবশালী ছিল যে এরা মহামান্য আদালতের নির্দেশেনা বা রায় থোরাই কেয়ার। গত ১৩ মার্চ' ২৩ শুনানি কালে মহামান্য হাইকোর্ট মামলার বিবাদিদের কে আগামী ৩.০৪.২০২৩ তারিখের মধ্যে মধুমিতা পার্কের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে মধুমিতা পার্কটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে নির্দেশনা দেয়ায় সাধারণ মানুষ একটু আশার আলো দেখছেন। তবে বিগত দিনে অদৃশ্য কারণে রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে এবারও চায়ের দোকান, কাপড় পট্টি, মাছ বাজার সহ সর্বত্র আলোচিত সমালোচিত হতো। 

শঙ্কা থাকলেও গতকাল শনিবার সারাদিন ব্যাপী জেলা সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আল আমিন এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন এবং হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেন। এসময়ে জেলা প্রশাসকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম মাহমুদুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম, ওসি তদন্ত তুষার কান্তি দাশ, সার্ভেয়ার মোঃ হাসান, মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম, আশাশুনি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মোঃ আবুল কালাম মোড়ল সহ থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।  উল্লেখ্য, পাইকগাছায় বহুল আলোচিত মধুমিতা পার্কটির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে বারংবার ধোঁয়শা কাটছিল না। ভূমিখেকোরা এতটাই প্রভাবশালী ছিল যে এরা মহামান্য আদালতের নির্দেশেনা বা রায় থোরাই কেয়ার। গত ১৩ মার্চ' ২৩ শুনানি কালে মহামান্য হাইকোর্ট মামলার বিবাদিদের কে আগামী ৩.০৪.২০২৩ তারিখের মধ্যে মধুমিতা পার্কের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে মধুমিতা পার্কটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে নির্দেশনা দেয়ায় সাধারণ মানুষ একটু আশার আলো দেখছেন। তবে বিগত দিনে অদৃশ্য কারণে রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে এবারও চায়ের দোকান, কাপড় পট্টি, মাছ বাজার সহ সর্বত্র আলোচিত সমালোচিত হতো।


পৌরসদরের প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত মধুমিতা পার্ক। যা_জনৈক মাদারমন্ডল তার স্বত্ব দখলীয় বাতিখালি মৌজারসাবেক ৯১খতিয়ানের ১৭১,১৭২ খতিয়ানের ১.০৭ একর জমি ভারত সরকারের নামে দান করেন। দানীয় জমিতে পুকুর খননের মাধ্যমে এলাকার মানুষের মিষ্টি পানির অভাব দূর হতে থাকে। ঐ পুকুরের পানি মিষ্টি হওয়ায় এলাকার লোকজন পুকুরটির নাম দেন মিষ্টি পুকুর। এরপর ১৯৮০ সালে তৎকালিন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মিষ্টি পুকুরটির সংরক্ষণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে খুলনার জেলা প্রশাসক নূরুল ইসলাম পুকুরটির প্রাচীরের মধ্যে চলাচলের জন্য চারিপাশে রাস্তা নির্মাণ, লোকজনের বসার জন্য পাকা বেঞ্চ, পাকা ঘাট সহ চারিপাশে বিভিন্ন ফল, ফুল ও বনজ গাছ রোপনের মাধ্যমে মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করেন। স্থানটির নামকরণ করা হয় মধুমিতা পার্ক। যা উদ্বোধন করেন তৎকালিন জেলা প্রশাসক নূরুল ইসলাম।

 ঐ সময় থেকে পৌরবাসির একমাত্র চিত্তবিনোদন কেন্দ্র হয় মধুমিতা পার্ক এবং পার্কের অভ্যান্তরে থাকা মিষ্টি পানির পুকুরটি পৌরবাসির মিষ্টি পানির অভাব দূরীকরণের একমাত্র আধার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ অবস্থায় মধুমিতা পার্ক ও মিষ্টি পুকুরের উপর কু-নজর পড়ে এক শ্রেণীর প্রভাবশালী, ভূমিখেকো, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও ব্যবসায়ীদের। তারা  জেলা পরিষদের অসৎ কর্মচারীদের সাথে যোগাযোগে করে পার্কের প্রাচীর ও রাস্তা ভেঙ্গে পাকা দোকানঘর নির্মাণ করে। তখন পৌরসভায় সচেতন মহল মধুমিতা পার্ক সংরক্ষণ কমিটি গঠন করে প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধন সহ কর্তৃপক্ষের কাছে পার্কটি সংরক্ষণের জন্য আবেদন-নিবেদন করতে থাকেন। ব্যর্থ হয়ে সহকারী জর্জ আদালত অবৈধ বন্দোবস্ত ও দখলকারিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে একটি মামলা করেন ও নিষেধাজ্ঞা পান। 

অবৈধ দখলকাররা তা অমান্য করে পেশি শক্তি বলে দোকানঘর নির্মাণ করে ব্যবসা করতে থাকেন। পরবর্তীতে পার্ক সংরক্ষণ কমিটি তৎকালিন জাতীয় সংসদের স্পীকারের শরণাপন্ন হন এবং তার পরামর্শে বিগত ২০০৫ সালে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। যার নং- ৩৫৯০/০৫। মহামান্য হাইকোর্ট মামলাটির শুনানি অন্তে বিগত ২০০৫ সালের ২৪মে মধুমিতা পার্কের অভ্যন্তরে অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করার আদেশ দিলেও অজানা কারণে হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন হয়নি।

যা মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের অবমাননা ও গুরুতর অপরাধ। উক্ত বিষয় উল্লেখ করে মধুমিতা পার্ক সংরক্ষণ কমিটি মহামান্য হাইকোর্ট কোর্ট অব কন্টেম পিটিশন দাখিল করেন। যার নং ১০২/২২। উক্ত পিটিশন কয়েকদফায় শুনানি অন্তে সর্বশেষ গত ১৩ মার্চ'২৩ মহামান্য হাইকোর্ট মামলার বিবাদিদের কে আগামী ২০দিনের মধ্যে মধুমিতা পার্কের সকলঅবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেমধুমিতা পার্কটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। 


গতকালে এ উচ্ছেদ অভিযানে হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়িত হয়েছে। ফলে, এতদিনের শঙ্কা দূর হলো, জনমনে খুঁশির আমেজ বিরাজ করছে।মধুমিতা পার্ক সংরক্ষণ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা জ্যৈষ্ঠ আইনজীবী জিএ সবুর ও মামলার বাদী এড. প্রশান্ত কুমার মন্ডলএর সাথে আলাপচারিতায় জানান, মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করায় কৃতজ্ঞতা জানাই। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ সম্পন্ন হয়েছে। 

পার্কটি বিনোদনের জন্য আরো আধুনিকায়ন করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। উচ্ছেদ কার্যক্রমে দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আল আমিন জানান, মহামান্য হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের নিদের্শনায় মধুমিতা পার্কের অবৈধ সকল স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম মাহমুদুর রহমান বলেন, উচ্ছেদ অভিযানে  পরিচালনার মাধ্যমে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা প্রতিপালিত হলো।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: