পাইকগাছা-তালা সীমান্তে বনায়নের দাবি নিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে চরম বিরোধ: সংঘর্ষের আশঙ্কা এলাকাবাসীর
পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল,পাইকগাছা::পাইকগাছা - তালা উপজেলা সীমান্তে কপোতাক্ষ নদের চরভরাটি জমিতে রোপনকৃত সামাজিক বনায়নের গাছের দাবি নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে চরম বিরোধ দেখা দিয়েছে। দু'পক্ষই মুখোমুখি অবস্থানে।
দাবিকৃত গাছ কর্তনকালে নিশ্চিত রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা প্রকাশ করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। সরেজমিনে জানাগেছে, ২০১৫ সাল থেকে দুপক্ষের মধ্যে ৬ কিলোমিটার এলাকার বনায়ন নিয়ে হামলা, মামলা লেগেই আছে। একই জায়গা দু'পক্ষ দু'ভাবে দাবি করে আসছে।
পাইকগাছার রাড়ুলী ইউনিয়নের কাটিপাড়ার আবুল হোসেন - আজগর আলী পক্ষের দাবী এটা নদীর পাড়ের সরকারি সম্পত্তি। যেখানে আমরা সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী বনায়ন করেছি। সরকারি সম্পত্তির প্রমাণ হিসেবে তারা রাড়ুলি ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রতিবেদন দেখান। অপরপক্ষ, তালা উপজেলার মুড়াগাছার নুরুল মীরের ছেলে সুন্দর আলী মীর এর দাবি এটা খাস বন্দোবস্ত সম্পত্তি। যা রেকর্ডীও সম্পত্তি। আমার নিজস্ব ৪ একর ছাড়া কয়েকজনের কাছ থেকে লীজ নিয়ে গাছের চারা লাগিয়ে পরিচর্যা করে আছি। এর প্রমাণ হিসেবে তারা নির্বাহী আদালতের রায় ও নায়েবের প্রতিবেদনে দেখা যায়। বনায়নের কর্তৃত্ব ও দখল নিয়ে দু'পক্ষই শক্তি সঞ্চয় করছে এমন আভাস পাওয়া গেছে। রাড়ুলীর মালোপাড়া হতে কাটিপাড়া শালিখা পর্যন্ত এ বনায়নে বাবলা, নিম গাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। এ নিয়ে থানা পুলিশ, ইউনিয়ন পরিষদে বসাবসি এমনকি পাইকগাছার নির্বাহী কোর্ট হতে একে অপরের পক্ষে রায় আছে বলে বিবাদমান দু'পক্ষই দাবি করেছেন।
![]() |
পাইকগাছা-তালা সীমান্তে বনায়নের দাবি নিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে চরম বিরোধ: সংঘর্ষের আশঙ্কা এলাকাবাসীর |
শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে গেলে কাঠিপাড়ার আবুল হেসেন- আজগর পক্ষ দাবি করেন কপোতাক্ষ নদের পাড়ে সরকারি জমির বনায়নে আদালতের অনুমতি, রাড়ুলী ইউপি চেয়ারম্যান ও পাইকগাছা উপজেলা বন কর্মকর্তা সরেজমিনে এসে নীতিমালা অনুযায়ী আমাদের গাছের ডাল-পালা কাটার অনুমতি দিলে তা বাস্তবায়ন করছি।
অন্যদিকে, তালা মুড়াগাছার সুন্দর আলী ও তার পরিবার দাবি করেন আমাদের রেকর্ডীয় জমির উপর সামাজিক বনায়নের মেয়াদ রয়েছে আগামী ইংরেজী ২০৩০ সাল পর্যন্ত। বৈধ কাগজপত্র থাকা স্বত্বেও প্রতিপক্ষ কাটিপাড়ার আবুল হোসেন - আজগর গংরা পেশি শক্তি বলে গাছ-পালা কেটে নিচ্ছে। সুন্দর আলী আরোও জানান, থানায় অভিযোগ করা হলে রাড়ুলী ক্যাম্প পুলিশ যখন ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন তখন গাছ কাটা বন্ধ করেন। আবার পুলিশ চলে আসলে আবারও ওরা গাছ-পালা কেটে নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে রাড়ুলী ক্যাম্প পুলিশের আইসি এসআই ইমরান হোসেন জানান, বনায়ন নিয়ে দু'পক্ষের বিরোধ দীর্ঘদিনের। আমি কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘটনাস্থলে পৌছে গাছ-পালা কর্তন বন্ধ করে দিয়েছি। তবে স্থানীয়দের আশংকা বনায়নের দখল নিয়ে যে কোন মুহূর্তে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারে।
0 coment rios: