![]() |
পাইকগাছার মঠবাটীতে রাস্তার কাছ ফেলে ঠিকাদার লাপাত্তা: জনদুর্ভোগ চরমে |
পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছা::পাইকগাছার মঠবাটীতে কয়েক মাস রাস্তা খুঁড়ে রাখার পর স্থানীয়দের চাপে পড়ে কিছু বালি ফেলে লাপাত্তা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। কাজ ফেলে রাখায় চরম জনদুর্ভোগে পড়েছে সড়কের আশপাশ কয়েক গ্রামের মানুষ। মূলত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খাম খেয়ালিপনা আর চরম উদাসীনতায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সরজমিনে দেখা যায়, সবুজের সমারোহে রাস্তার দুই পাশে উঁচু করে মাটি রাখা। বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি কোথাও কাঁদা ও বালিতে মাখামাখি, কোথাও পানিতে তলিযে যায়। বর্ষা মৌসুম হওয়ায় ক'দিনের ভারী বৃষ্টিতে জনদুর্ভোগের সীমা নেই। প্রতিদিন কর্মজীবী মানুষেরা তাদের স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে উপজেলা সদর সহ অন্যান্য স্থানে যেতে হয়।
মঠবাটী প্রাইমারি স্কুল, গদাইপুর ভোলানাথ সুখদা সুন্দরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শহীদ জিয়া বালিকা বিদ্যালয়, সদরের সরকারি বেসরকারি কলেজ অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীদের এপথ দিয়ে যেতে হয়। এছাড়া হাট-বাজারে কেনাকাটা, অসুস্থ রোগীদের এপথে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় মহাবিপাকে পড়তে হয় তাদের। এমন বিড়ম্বনা থেকে দ্রুত প্রতিকার পেতে এলাকাবাসী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ধরণা দিচ্ছে । উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, খুলনা বিভাগের পল্লী উন্নয়ন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের মঠবাড়ি গ্রামের শংকর ও সওকত মাস্টারের বাড়ি থেকে জামাল নায়েবের বাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার পিচের রাস্তা উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ৯৪ লাখ ৬ হাজার ৮১৯ টাকা বরাদ্ধ হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জয়-মা এন্টারপ্রাইজ ২০২২ সালের ৩০ জুন কার্যাদেশ পান। ৭ জুলাই রাস্তার ইট তুলে বালি ভরাটের জন্য খননকাজ শুরু করেন।
অল্প সময়ে খনন কাজ শেষ হলেও বালি ভরাট না করে প্রায় ৬ মাস ফেলে রাখেন। স্থানীয় এলাকাবাসীদের চাপে বালি ভরাট কাজ শুরু করলেও শেষ না করেই ফেলে রেখেছে ঠিকাদার। কোন খোঁজ খবর নাই। বলতে গেলে লাপাত্তা। ফলে কয়েক গ্রামের হাজার হাজার মানুষের চলাচল করতে চরম বিড়ম্বানায় পড়তে হচ্ছে। গত মে মাসের ৩০ তারিখ এই কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। মঠবাটী গ্রামের সহকারী শিক্ষক শংকর রায়, ব্যাংকার প্রজিৎ , সুভাষ দেবনাথ রা বলেন, এক বছর পার হয়ে গেল, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ না করে ফেলে রাখায় গ্রামের মানুষের চলাচলে খুব সমস্যা হচ্ছে। আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সমিরণ সাধু সহ স্থানীয় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি, প্রকৌশলী অফিসে সমস্যার কথা জানালেও কাজে আসেনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আঃ আজিজ বলেন, রাস্তা খুঁড়ে রাখার কারণে এলাকার মানুষের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। আমি ঠিকাদারকে কয়েকবার বলেছি দ্রুত কাজটি শেষ করার জন্য কিন্তু এখন ঠিকাদারের কোনো খোঁজ নেই। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জয়-মা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী তাপস ঘোষ জানান, কাজটি শেখ হাসনাত নামে একজনকে সাব কন্ট্রাক্টর কে দিয়েছিলাম। সে কাজটি না করে ফেলে রেখেছে। বিষয়টি আমি জেনেছি। তার সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজটি দ্রুত শুরু করার চেষ্টা করছি উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা মোঃ হাফিজুর রহমান খান জানান, ঠিকাদারকে বারবার তাগাদা দিয়ে কাজ করাতে পারছি না। কয়েকবার তাদের চিঠি দিয়েছি।
তারপরও তারা কাজ করছে না। ইতিমধ্যে কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কার্যাদেশ বাতিল ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করার জন্য নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছি। এদিকে, স্থানীয় এলাকাবাসী জনদুর্ভোগ এর কথা বিবেচনায় রেখে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য সহ সংশ্লিষ্টদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
0 coment rios: